আমরা সবাই চাই ফিট থাকতে, অনেকে প্রায় চেষ্টাও করি ওজন কমানোর, কিন্তু দেখা যায় কিছুদিনের মধ্যেই মোটিভেশন হারিয়ে ফেলি। ফিট থাকতে চাইলে কিন্তু বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই, দরকার স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, হালকা ব্যায়াম করা এবং মোটিভেটেড থাকা।
কেবল একদিনের জন্য ফিট থাকা অথবা একদিনেই ফিট হয়ে যাবেন এমনতা ভাবলে ভুল হবে। ফিট থাকা তা আলাদা কোনো ব্যাপার না,এটি এক ধরণের লাইফস্টাইল।
আমাদের দিনের শুরুটা করা উচিত খালি পেটে ২ গ্লাস পানি খেয়ে, তারপর খাওয়া দরকার স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা। একটি স্বাস্থ্যকর প্লেটেই ৪ ধরণের খাবার থাকে যার অর্ধেক থাকা উচিত ফলমূল আর সবজি। ৪ ভাগের এক ভাগে থাকবে কার্বোহাইড্রেট যেমন ভাত, রুটি, নুডলস, ওটস ।অন্য এক ভাগে থাকবে প্রোটিন যা হতে পারে মাছ, মাংস, ডিম।আর অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে সারাদিন. একজন প্রাপ্তবয়স্কের দিনে ২-৩ লিটার পানি খাওয়া উচিত। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে একবারে বেশি না খেয়ে আমাদের খাবারের মাঝে ছোট ছোট স্ন্যাকস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। স্ন্যাকস হিসেবে চিপস, বিস্কুট জাতীয় চিনি, তেলযুক্ত খাবার না খয়ে স্বাস্থ্যের জন্য ভাল গাজর, শশা, বাদাম, ফল, পপকর্ন খাওয়া। একটা মজা ব্যাপার হলো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে যেয়ে যে ডেসার্ট খাওয়া যাবেনা তা কিন্তু না। মূল খাবারের থেকে কার্বোহাইড্রেটের অংশ তা কমিয়ে এনে একটা ডেসার্ট খুব সহজেই খেয়ে ফেলা যায় । খেয়াল রাখবেন যাই খাবেন, তা যাতে মেপে খান: পরিমিতিবোধ মেনে চলা সবক্ষেত্রেই দরকার।
আমরা সবাই জানি শারীরিক গঠনের জন্য দরকার পেশী, আর ৩০ এর পর আমাদের পেশী দুর্বল হতে শুরু করে। সুস্বাস্থ্যের জন্য সুগঠিত পেশী অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু দেখতে সুন্দর লাগা বা শক্তিশালী হওয়ার জন্যে নয়, আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতা নিশ্চিত করে।মাংসপেশি অথবা লিন বডি ম্যাস আমাদের বেসাল মেটাবোলিক রেটের সাথে সম্পর্কিত। বেসাল মেটাবলিক রেট (বিএমআর) হল দেহের প্রতিদিনের কাজ সম্পাদনের জন্য যে পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হয়। যত বেশি লিন বডি ম্যাস তত বেশি আমাদের বেসাল মেটাবোলিক রেট। তার মানে যাদের অনেক বেশি লিন বডি ম্যাস তারা অল্প পরিশ্রমে অনেক বেশি ক্যালোরি বার্ন করতে সক্ষম যা তাদেরকে স্থূলতা থেকে দূরে রেখে সুস্থ রাখে। সুস্থ থাকার জন্যে ভালো ইমিউনিটি ও অনেক প্রয়োজন। ইমিউনিটির জন্য ভিটামিনের পাশাপাশি প্রোটিন অনেক দরকারি। আমাদের দেহ এই প্রোটিন শুধু খাবার থেকে না মাংসপেশির থেকেও জোগাড় করে। তাই সহজেই বলা যায় লিন বডি ম্যাস আমাদের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও সাহায্য করে। লিন বডি ম্যাস আমাদের হাড়ের সুস্থতা নিশ্চিত করা এবং ক্ষয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে। লিন বডি ম্যাস আমাদের হাড়কে মজবুত রাখে, অস্টিওপোরেসিস এবং হাড়কে দুর্বল হয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমায়।
মাংসপেশি অথবা লিন বডি ম্যাস তৈরি করাতা সহজ নয় তবে অসম্ভব ও নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করলে, পুষ্টিকর খাবার খেলে মাংসপেশি অথবা লিন বডি ম্যাস তৈরি করা সম্ভব। প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম আছে এমন খাবার প্রতিদিন খেতে হবে। মাছ, মাংস, ডাল, দই, দুধ, পনির, বাদাম এবং ডিম প্রচুর পরিমানে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম থাকে। এই পরিবর্তন একদিনেই আসবে না, সময় লাগবে, তাই ধৈর্য ধরতে হবে। এইজন্যেই জিমে যেতে হবে এমন বাদ্ধবাধকতা নেই। নিয়ম করে বাসায় বসে এক্সারসাইজ করা, হাঁটা, যোগব্যায়াম করা, বাসার কাজও লিন বডি ম্যাস তৈরি করা সম্ভব।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে সুস্থ থাকা তা অনেক জরুরি। সুস্থ থাকা মানে শুধু ফিট থাকা না, সুস্থ থাকা মানে রোগ প্রতিরোধ করে আনন্দের সাথে জীবনযাপন করা।ছোট ছোট কিছু অভ্যাস করলেই আমরা সুস্থ থাকতে পারি সহজেই।