৭ থেকে ৯ বছর বয়সের শিশুদের ডায়েটে পূর্ণমাত্রায় পুষ্টি থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার যা তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। ডায়েটে এমন কিছু জিনিস রাখতে হবে, যাতে ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের পাশাপাশি ক্যালোরি থাকে। ছোট বাচ্চাদের খাওয়ানো একটু কষ্টকর।
এজন্য নীচের জিনিসগুলি আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন যেন বাচ্চা সঠিক পুস্টি পায়।
১। বাচ্চার ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট এর চাহিদা পূরনের জন্য ভাত,রুটি, আলু ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।প্রতি বেলায় ২ টি করে রুটি বা ২ কাপ করে ভাত এবং সারাদিনে ১ টি বা ২ টি করে আলু দেয়া যায়।
২।এ বয়সী বাচ্চারা সাধারণত দ্রুত বেড়ে উঠে, লম্বা হয়। তাদের মাসল এবং টিস্যু গঠনের জন্য বেশি পরিমানে প্রোটিন দিতে হবে। প্রোটিন হিসাবে মাছ/মাংস, ডিম,দুধ, বিভিন্ন রকমের ডাল,বাদাম ইত্যাদি দেয়া যায়।
৩। এই বয়সী বাচ্চাদের নতুন করে পছন্দ অপছন্দ তৈরি হয় বলে শাক সবজী খেতে অনীহা দেখা যায়। তাই শাক সবজী একেক সময় একেক রকম করে রান্না করে দেয়া যায়।প্রতি দিন ১ কাপ পরিমান শাক এবং ২ কাপ পরিমান সব্জি দিতে হবে।
৪।এই বয়সে ভিটামিন এর ঘাটতি দেখা যায়। এ জন্য প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় গাজর,মিস্টি কুমড়া,পালং শাক,মিস্টি আলু, দুধ, পনির, বিভিন্নরকম কমলা,হলুদ সব্জি থাকলে ভালো।
৫।শাক সবজি যদি খেতে না চায় তবে অন্যভাবে রান্না করে দেয়া যেতে পারে,যেমনঃশাক-সব্জীর স্যুপ, ভেজিটেবল রোল,সবজির চপ ইত্যাদি।
৬।আয়রনের অভাবে যেন রক্তশূন্যতা না হয় সেজন্য প্রতি দিন একটা পাকা কলা, সপ্তাহে এক দিন করে কাচা কলা, শিং মাছ, কলিজা,কচুর শাক,ছোলার ডাল,বেদানা ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।
৭।এ বয়সী বাচ্চার হাড়ের গঠন ভালো হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ডি গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতি দিন ১ টি ডিমের কুসুম, ২ গ্লাস দুধ,বা দুধের তৈরি খাবার যেমনঃ ছানা, পনির, মাখন ইত্যাদি দেয়া যায়। এছাড়া প্রতি দিন ৩০ মিঃ করে রোদে থাকতে হবে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরনের জন্য।
৮।বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল শোষণের জন্য ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতি দিন এক গ্লাস লেবুর সরবত এবং একটি দেশি ফল যেমনঃ পেয়ারা,আমড়া,জাম্বুরা ইত্যাদি দিতে হবে।
৯। ৭ থেকে ৯ বছরের শিশুরা অনেক খেলাধুলা করে, চঞ্চল থাকে। আর এজন্য তাদের পানি পান করার পরিমান কম থাকে।কিন্তু বাচ্চাদের শরীরে পানির প্রয়োজন তাদের শরীরের ওজনের ১০-১৫% যেখানে বড়দের প্রয়োজন হয় ২-৪%। এজন্য এ বয়সের বাচ্চাদের প্রতি দিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাওয়াতে হবে।
১০।এ বয়সে একটু বাইরের খাবারের প্রতি ঝোক দেখা যায়। এতে ওজন বেড়ে যায় বা পুস্টির ঘাটতি দেখা যায়।এই জন্য প্রসেসড ফুড,ফাস্ট ফুড,কোমল পানীয় ইত্যাদি কম খেতে দিতে হবে।
সর্বোপরি বাচ্চাদের হাড়ের বৃদ্ধি ও গঠন ভালো হওয়ার জন্য এবং শারিরীক সুস্থতার জন্য প্রতি দিন কিছু শারীরিক পরিশ্রম, হাটা হাটি,খেলা ধূলা বা ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।