যেসব খাবারে শিশুদের রাখবে সুস্থ

সুস্থ থাকতে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি, সে ততো বেশি রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম এবং সংক্রমণের ঝুঁকি ও রোগের তীব্রতা তার জন্য কম। তাই ছোট থেকেই দরকার স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা।
এই তালিকা আপনি করতে পারেন খুব সহজেই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খুব দামি খাবার নয় বরং সাধারণ খাবার যেমন- বাদাম, মৌসুমি ফল, শাক-সবজি, দই, মাছ, মাংস, পনির, ডিম, দুধ, রসুন, আদা, হলুদ-ই যথেষ্ট।

চলুন জেনে নেয়া যাক শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোন খাবারগুলো সাহায্য করে-

প্রোটিনঃ
প্রোটিন শরীরের অভ্যন্তরীণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডিম, মাছ, মুরগির মাংস, ডাল থেকে আপনি প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাবেন। প্রোটিনে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরের কোষকে পুষ্টি দেয়।
২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত গড় বয়স ও ওজন অনুপাতে প্রতি কেজিতে ১ থেকে ১.৫ গ্রাম প্রোটিন প্রতিদিন দরকার। চাল ও ডালের মিশ্রণে খিচুড়ি, প্রোটিন একটি অন্যতম উৎস শিশুদের জন্য। যেকোনো লাল মাংস অর্থাৎ গরু ও খাসির মাংস এবং কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে জিংক আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ভিটামিন-সিঃ
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার দারুণ কার্যকর। ভিটামিন-সি শরীরের অতি প্রয়োজনীয় একটি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট। ভিটামিন সি-ত্বক, দাঁত ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। এই ভিটামিন পাওয়া যায় আমাদের পরিচিত ফল এবং বিভিন্ন শাকসবজিতে, যেমন: আমলকী, লেবু, কমলালেবু, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, পেঁপে, কাঁচা মরিচ। তবে যেহেতু শরীরে ভিটামিন-সি জমা থাকে না, তাই প্রতিদিন এটি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের কয়েকজন গবেষক ভিটামিন সি-র উপকারিতা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে ৫-১২ বছরের শিশুদের দৈনিক ন্যূনতম ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন.।

বাদামঃ
বাদামে রয়েছে জিংক যা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জিংকের ঘাটতি হলে রক্তে শ্বেতকণিকার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে রাখা আখরোট, পেস্তা, খেজুর, কিশমিশ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। আখরোট ও কাঠবাদাম ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ যা ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে বাঁচায়। গবেষণায় বলা হয়, প্রতিদিন ১০ গ্রাম বাদাম খাওয়া বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।

দইঃ
দইতে একধরণের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু শিশুদেরই নয়, সবারই প্রতিদিন দই খাওয়া উচিৎ। হজম শক্তি বৃধি করে। খাবার পর প্রতিদিন ২ চামচ থেকে ১ কাপ টক দই খাওয়া ভালো।

মশলাঃ
কিছু মশলা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রসুন, আদা, হলুদ, লবঙ্গ, কালোজিরায় প্রচুর প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। এগুলো শরীরকে জীবাণুমুক্ত করে সহজে এবং সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায়; বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই পরিমাণমতো মশলা খাওয়াও আমরা শিশুদের খাবারে যুক্ত করতে পারি।

facebook.com linkedin.com twitter.com
Categories:

Leave a Reply

শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রয়োজন যে ৮টি খাবার
প্রতিটি পরিবারে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে থাকে বাড়তি সচেতনতা। বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে, বাচ্চার বয়স
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে কোন ৫টি সমস্যা দেখা দেয়?
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে যে ৫টি সমস্যা দেখা দেয় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আয়োডিনের ঘাটতির
পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার
স্টুডেন্ট লাইফ মানেই প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। শিক্ষা জীবনে স্টুডেন্টদের পরীক্ষার মাধ্যমেই ধাপে ধাপে এগিয়ে
দৈহিক সুস্থতায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংক কেন প্রয়োজন?
সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানে পরিপূর্ণ থাকা চাই। সহজভাবে বলতে চাইলে,
don't worry about summer
প্রচন্ড গরমে নিমিষেই দূর হবে সারাদিনের ক্লান্তি
রোদের তাপ ক্রমশ বাড়ছে তাই না? এদিকে এই গরমের দিনে মিসেস শারমিনকে থাকতে হয় সারাদিন
গরমে সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাওয়া চাই?
ইদানীং অনেক গরম পড়েছে তাই না? চারিদিকে গরমের দাবদাহে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। কিন্তু জীবন-জীবীকার খোঁজে আমাদের
কম খরচে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে খাদ্যতালিকা যেমন হওয়া উচিত
বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন? মাছ-মাংসের দাম শুনলেই মনে হয় বাজারে আগুন লেগে আছে। কিন্তু
DHA এবং ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট
ডোকোসাহেক্সনিক এসিড বা সংক্ষেপে DHA হলো মস্তিষ্ক গঠনের একদম প্রাথমিক উপাদান। সহজ করে বললে DHA
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন কেন জরুরি ?
গর্ভকালীন সময়ে গর্ভস্থ সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিতে মায়ের চাই বাড়তি যত্ন ও সব রকমের পুষ্টি
বুদ্ধিতে বৃদ্ধিতে সন্তানের চাই সঠিক পুষ্টি
পুষ্টি ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুব জরুরি। কেননা জন্মের পর প্রথ এই কয়েক