বাড়বে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দূর হবে অসুখ বিসুখের সমস্যা

রোগ প্রতিরোধ

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তুলনায় শিশুদের রোগবালাইতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ, জন্মের পর থেকেই তার দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পরিবেশের বিভিন্ন জীবাণুর সাথে পরিচিত হতে শুরু করে কিন্তু এসব রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাটা তারা অর্জন করে একটু ধীরে।

শিশুর জীবনে প্রথম খাদ্য হলো মাতৃদুগ্ধ। সন্তান জন্মদানের প্রথম এক-দুই দিন মার স্তনে শাল দুধ আসে। যাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে রোগ প্রতিরোধকারী এন্টিবডি এবং শ্বেত রক্তকণিকা। যেকোনো ফর্মুলা বা বাজারজাত করা দুধের চেয়ে মায়ের দুধ অনেক বেশি কার্যকরী। বয়সের সাথে সাথে শিশুর শরীরে রোগ জীবাণু আক্রমণের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই, তার দরকার আগের থেকেও বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এর জন্য মাতৃদুধের পাশাপাশি তার প্রয়োজন বিভিন্ন ধরণের খাদ্যের।

শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তাকে যেসব খাদ্য খেতে দিবেন:

দই: দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি তার পেটের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর তো বটেই, সর্দি-কাশিতেও বেশ উপকারী।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমুল: ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি যেকোনো কাটাছেঁড়া দ্রুত সারাতে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এটি কোষের ক্ষয়রোধ করতেও ভূমিকা রাখে। কমলা, বরই, আমলকী ও অন্যান্য টক ও রঙিন ফল-মূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।

গরুর দুধ: শিশুর এক-দুই বছর বয়সের পর থেকে সে গরুর দুধ খেতে পারবে। গরুর দুধ শুধু তার হাড়ই মজবুত করে না, ইমিউন সিস্টেমকেও করে স্ট্রং। আর দুধের ভিটামিন ডি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।

মাছ, মাংস, ডিম : মাছ, মাংস, ডিম খেলে শরীরে জিংক ও প্রোটিন-এর পরিমাণ ঠিক থাকে। জিংক রক্তের শ্বেত রক্তকণিকাদের আরও বেশি শক্তিশালী করে গড়ে তোলে যা দেহের ক্ষতিকর রোগ জীবাণু ধ্বংস করে।

সবুজ শাকসবজি: ভিটামিন ই-এর উৎস হিসেবে সবুজ শাকসবজির কোন জুড়ি নেই। আর এই ভিটামিন ই শরীরের ক্ষতিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার পাশাপাশি কোষ ও টিস্যুকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।

ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার: বাদাম, বিভিন্ন মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছের তেলে প্রচুর

পরিমাণে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। এটি শ্বেত রক্তকণিকার কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে, দেহে ইনফেকশনের হার কমে যায়।

মাশরুম: মাশরুমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি ও বিভিন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে ভূমিকা রাখে।

এসব খাবারের পাশাপাশি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আরও যেসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে-

  • বাচ্চা যেন নিয়মিত বাইরে খেলাধুলা করে।
  • পরিমিত ঘুম। ২-৩ বছরের বাচ্চা প্রতিদিন ১০-১২ ঘন্টা, ৪-৫ বছরের বাচ্চা প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা ঘুমায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে
  • টিকা নিয়ে হেলাফেলা করা যাবে না

এসব মেনে চললে আপনার বাচ্চা থাকবে সুস্থ। বৃদ্ধি পাবে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা নিশ্চিত করবে তার হেলদি, স্ট্রং ভবিষ্যৎ।

এছাড়া বাচ্চার অরুচি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে জানতে ক্লিক করুনঃ

 

https://youtu.be/7rVliGZ5tJw

facebook.com linkedin.com twitter.com
Categories:

Leave a Reply

শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রয়োজন যে ৮টি খাবার
প্রতিটি পরিবারে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে থাকে বাড়তি সচেতনতা। বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে, বাচ্চার বয়স
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে কোন ৫টি সমস্যা দেখা দেয়?
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে যে ৫টি সমস্যা দেখা দেয় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আয়োডিনের ঘাটতির
পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার
স্টুডেন্ট লাইফ মানেই প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। শিক্ষা জীবনে স্টুডেন্টদের পরীক্ষার মাধ্যমেই ধাপে ধাপে এগিয়ে
দৈহিক সুস্থতায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংক কেন প্রয়োজন?
সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানে পরিপূর্ণ থাকা চাই। সহজভাবে বলতে চাইলে,
don't worry about summer
প্রচন্ড গরমে নিমিষেই দূর হবে সারাদিনের ক্লান্তি
রোদের তাপ ক্রমশ বাড়ছে তাই না? এদিকে এই গরমের দিনে মিসেস শারমিনকে থাকতে হয় সারাদিন
গরমে সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাওয়া চাই?
ইদানীং অনেক গরম পড়েছে তাই না? চারিদিকে গরমের দাবদাহে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। কিন্তু জীবন-জীবীকার খোঁজে আমাদের
কম খরচে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে খাদ্যতালিকা যেমন হওয়া উচিত
বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন? মাছ-মাংসের দাম শুনলেই মনে হয় বাজারে আগুন লেগে আছে। কিন্তু
DHA এবং ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট
ডোকোসাহেক্সনিক এসিড বা সংক্ষেপে DHA হলো মস্তিষ্ক গঠনের একদম প্রাথমিক উপাদান। সহজ করে বললে DHA
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন কেন জরুরি ?
গর্ভকালীন সময়ে গর্ভস্থ সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিতে মায়ের চাই বাড়তি যত্ন ও সব রকমের পুষ্টি
বুদ্ধিতে বৃদ্ধিতে সন্তানের চাই সঠিক পুষ্টি
পুষ্টি ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুব জরুরি। কেননা জন্মের পর প্রথ এই কয়েক