“এটা খাবো না, ওটা খাই না”-এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় অনেক অভিভাবককেই, বিশেষ করে মায়েরা থাকেন ভীষণ চিন্তায়। বাচ্চা একদিন মাছ খেলে পরদিন আবার ছুঁয়েও দেখতে চায় না! আপনি যদি এই সমস্যা সমাধান করতে না পারেন তবে বাচ্চার এই সীমিত খাদ্য গ্রহণ তৈরি করবে পুষ্টির অভাব। তাই আসুন জেনে নেয়া যাক কী কারণে বাচ্চারা খেতে চায় না এবং কীভাবে পুষ্টির অভাব পূরণ করবেন।
২-৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের না খাওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। এর মাঝে একটি হলো অল্প খাবারে পরিপূর্ণ পুষ্টি দেওয়ার চেষ্টা করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, একই খাবার যদি প্রতিবেলায় দেওয়া হয়, তাহলে ওই খাবার পছন্দ করে না। বাচ্চারা একই রকম খাবার কখনোই খেতে চায় না।
তাই আপনি যখনই বাচ্চার জন্য খাবার তৈরি করবেন তখন খেয়াল রাখবেন যেন প্রকৃত রান্নার উপকরণগুলো বাচ্চার খাবারেও ঠিক পরিমাণে থাকে। যেমন- বাচ্চার খিচুড়িতে চাল-ডালের মিশ্রণের সাথে একগাদা সবজি না দিয়ে যতটুকু দিলে স্বাদ ঠিক থাকবে ততটুকুই দিবেন।
কী করবেন?
⦁ অযথা জোর করবেন না
শিশুকে কখনো জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। তাকে একবার জোর করে খাওয়ালে পরে যখনই তাকে খাওয়াতে চাইবেন, তখনই সে ভয় পাবে। খাবারের প্রতি তার আগ্রহ কমে যাবে। একসময় খাবারের প্রতি তার বিতৃষ্ণা জন্মাতে পারে।
⦁ খাওয়ার সময় টিভি বা কার্টুন দেখা নয়
শিশুদের টিভি বা কার্টুন দেখিয়ে খাবার খাওয়ালে এগুলোতে সে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। এমনিতেই বেশি সময় টিভি দেখা শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। টিভি দেখার সময় খাওয়ালে শিশুর বদহজম হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ এ সময় টিভিতে মনোযোগ থাকার কারণে পাকস্থলী থেকে প্রয়োজনীয় পাচক রস নিঃসৃত হয় না।
⦁ খাবারে ভিন্নতা আনুন
প্রতিদিন এক ধরনের খাবার না দিয়ে খাবারে ভিন্নতা আনুন। যদি তার মনের ভাব সে প্রকাশ করতে পারে, তবে সে যা খেতে চায় তা জেনে নিন। তার পছন্দমতো খাবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করে খেতে দিন।
⦁ সকালে নাশতা আবশ্য
বাচ্চাকে অবশ্যই সকালের নাশতা করাতে হবে। যদি বাচ্চা স্কুলে যায় তাহলে যে খাবার সন্তান অল্প সময়ের মধ্যে নিতে পারে, সেই খাবারটিই স্কুলে যাওয়ার আগে দিন। যেমন- স্কুলে যাওয়ার আগে মিল্ক শেক বা দুধের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন বা দুধ, ডিম, চিনি দিয়ে বানানো অন্য কোনো খাবার। এ খাবার উপকরণটি অল্প সময়ে বানানো যায় এবং অল্প পরিমাণ খেলেও সে পরিপূর্ণ পুষ্টি পাবে। তাছাড়া টিফিনে অবশ্যই বাসায় বানানো খাবার দিবেন।
⦁ যখন-তখন খাবার নয়
শিশুদের রুটিন মাফিক খাওয়ালে ভালো। যখন-তখন খাবার দেওয়ার কারণে যথাসময়ে তার খিদে লাগবে না। আর সে খেতে পারবে না। অনেক শিশু স্কুল থেকে ফিরেই বিস্কুট, ফল বা ফলের রস ইত্যাদি খায়। তারপর হয়তো দুপুরের খাবারের সময়। তখন সে ঠিকমতো খেতে চাইবে না, কারণ ইতিমধ্যেই তার খিদে নষ্ট হয়ে গেছে। আবার অনেক শিশু সারা দিন ইচ্ছামতো যখন-তখন বিস্কুট, ফল, লজেন্স, আইসক্রিম ইত্যাদি খেয়ে পেট ভর্তি করে রাখে। কিন্তু মূল খাবারের সময় তেমন কিছুই খায় না।
⦁ বাইরের খাবার ঘরে নয়
বাইরের খাবার একেবারেই দেবেন না, তা নয়। যখন বড়দের সঙ্গে কোথাও যাবে নিশ্চয়ই বাইরের খাবার সে খেতে পারবে। তবে তার জন্য আলাদা করে প্রতিদিন বাইরের খাবার ঘরে আনবেন না বা তাকে বাইরে খেতে নিয়ে যাবেন না।