পেট কষাভাব দূর করতে বাচ্চাকে দিন বিশেষ খাবার

সব বয়সের সবার জন্যই কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেট কষা হওয়া বেশ কষ্টকরবিশেষ করে ১-৩ বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা আরও সিরিয়াস। সাধারণত ডায়েটে ব্যালেন্স না থাকলে এ সমস্যা হয়। তাই বাচ্চার পেট কষা হলে আগে খুঁজে দেখতে হবেবাচ্চার খাবারটা ঠিক আছে কি না। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন যে বাচ্চার পেট কষা হয়েছে?

বাচ্চার পেট কষা হয়েছে কিনা সেটা অনেক সময়ই দেখে বুঝা যায় না, আর তাই তখন এর সমাধান বের করাটাও হয়ে উঠে কঠিন। তবুও, কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ দেখে বুঝা যায় যে বাচ্চার পেট কষা হয়েছে।

যেমন-

বাচ্চার পটি শক্ত ও লম্বা হওয়াসপ্তাহে ৩ বার পটি না করা‘র‍্যাবিট ড্রপিংস’ বা চাক ধরা পটি হওয়াবাচ্চা পটি করার সময় ব্যথা পাওয়াপটি’র সময়ে হালকা রক্ত যাওয়াপটি করার পড়ে বাচ্চার পেট ব্যথা কমে যাওয়াবাচ্চার খাওয়ার রুচি কমে যাওয়াবাচ্চার ক্ষুধামন্দা ভাব

এই উপসর্গগুলো বাচ্চার মাঝে দেখা দিলে বুঝবেন, তার পেট কষা হয়েছে। এক্ষেত্রে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া খুব জরুরী। পাশাপাশি, তার খাদ্যাভ্যাসে আনা দরকার পরিবর্তন। কেননা এই পরিবর্তনগুলোই তাকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় সারভাইভ করতে সাহায্য করবে।

child eating food in chair
বাচ্চা ভালো খেলেই ভালো থাকবে
পেট কষা হলে বাচ্চাকে যেসব খাবার খেতে দিবেন-

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়ানহেলদি ফ্যাটতরমুজ, আম, শসাফাইবার-সমৃদ্ধ খাবারঅ্যাক্টিভ রাখুনস্কোয়াট পজিশনপুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ

তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়ান; এটা কিন্তু মাস্ট! অনেক বাচ্চা পানি খেতে চায় না। সেক্ষেত্রে, সুন্দর কার্টুন-ওয়ালা বোতল কিংবা স্ট্র দিয়ে পানি খেতে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি, তাকে পেঁপে, কলা, কমলার জুসও খাওয়ানো যেতে পারে।

হেলদি ফ্যাট পটি নরম হতে সাহায্য করে। তাই, তার ডায়েটে হেলদি ফ্যাট যেমন নারকেল তেল, নারকেলের দুধ, বাদাম, পিনাট বাটার ইত্যাদি যোগ করুন। বাচ্চা খেতে না চাইলেও লুকিয়ে তার পছন্দের খাবারের সাথে এক চামচ মিশিয়ে দিন।

তরমুজ, আম, শসাতে পানির পরিমাণ অনেক বেশি। পানি সমৃদ্ধ এসব সবজি ও ফল কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় খুবই উপকারী। বাচ্চা যদি এই ধরণের ফল খেতে না চায় তবে তাকে জুস বানিয়ে খাওয়াতে পারেন।

হেলদি ফ্যাট ও পানি সমৃদ্ধ খাবারের সাথে ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার মিশিয়ে খাওয়ান; এতে বাচ্চার ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো কাজ করবে। তাই, তাকে হাই ফাইভার সমৃদ্ধ খাবার যেমন- খোসাসহ আলু, কষাযুক্ত ফল, ওট মিল, শাক পাটাকপি, পপকর্ণ ইত্যাদি খেতে দিন। কিন্তু এসব খাবার দেওয়ার সময় পানি, হেলদি ফ্যাট এবং পানি সমৃদ্ধ ফুড যুক্ত করতে ভুলবেন না যেনো। না হলে, অবস্থা উল্টোটা হবে

বাচ্চাকে সারাদিন অ্যাক্টিভ রাখুন। এটি তার ডায়জেস্টিভ সিস্টেম ভালো করতে সহায়তা করবে।

বাচ্চাকে পটি করাতে এমন সিট ব্যবহার করুণ যাতে সে হাটু ভেঙে স্কোয়াট পজিশনে বসতে পারে। এই পজিশনটা বাচ্চার জন্য বেশ আরামদায়ক ও সুবিধাজনক।

বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা ভেদে পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে তার দৈনিক পানির পরিমাণ নির্ণয় করুন।

ডিপ ফ্রাইড খাবার এবং রিক্ত প্রোটিন জাতীয় খাবার তার অবস্থা আরও বেশি খারাপ করতে পারে। তাই, এ ধরণের খাবার এসময়ে এড়িয়ে যাওয়া ভালো। মনে রাখা জরুরী যে, এই খাদ্যাভাসগুলো তাকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় সাহায্য করবে; তবে কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করে দিবে না। তাই, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য আপনাকে আলাদা ব্যবস্থাগুলোও নিতে হবে। এক্ষেত্রে  সবচেয়ে ভালো হয়, যদি তার পটি টাইম রুটিনের আওতায় আনা যায়। তাহলে, ঘরে থাকা অবস্থায় তার নিয়মিত পটি করার অভ্যাস তৈরি হবে এবং সে এধরণের সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে। আসুন, আমরা আমাদের বাচ্চার খাদ্যাভ্যাসে হেলদি কিছু পরিবর্তন এনে তাকে মুক্ত রাখি কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে।

facebook.com linkedin.com twitter.com
Categories:

Leave a Reply

শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রয়োজন যে ৮টি খাবার
প্রতিটি পরিবারে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে থাকে বাড়তি সচেতনতা। বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে, বাচ্চার বয়স
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে কোন ৫টি সমস্যা দেখা দেয়?
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে যে ৫টি সমস্যা দেখা দেয় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আয়োডিনের ঘাটতির
পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার
স্টুডেন্ট লাইফ মানেই প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। শিক্ষা জীবনে স্টুডেন্টদের পরীক্ষার মাধ্যমেই ধাপে ধাপে এগিয়ে
দৈহিক সুস্থতায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংক কেন প্রয়োজন?
সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানে পরিপূর্ণ থাকা চাই। সহজভাবে বলতে চাইলে,
don't worry about summer
প্রচন্ড গরমে নিমিষেই দূর হবে সারাদিনের ক্লান্তি
রোদের তাপ ক্রমশ বাড়ছে তাই না? এদিকে এই গরমের দিনে মিসেস শারমিনকে থাকতে হয় সারাদিন
গরমে সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাওয়া চাই?
ইদানীং অনেক গরম পড়েছে তাই না? চারিদিকে গরমের দাবদাহে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। কিন্তু জীবন-জীবীকার খোঁজে আমাদের
কম খরচে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে খাদ্যতালিকা যেমন হওয়া উচিত
বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন? মাছ-মাংসের দাম শুনলেই মনে হয় বাজারে আগুন লেগে আছে। কিন্তু
DHA এবং ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট
ডোকোসাহেক্সনিক এসিড বা সংক্ষেপে DHA হলো মস্তিষ্ক গঠনের একদম প্রাথমিক উপাদান। সহজ করে বললে DHA
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন কেন জরুরি ?
গর্ভকালীন সময়ে গর্ভস্থ সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিতে মায়ের চাই বাড়তি যত্ন ও সব রকমের পুষ্টি
বুদ্ধিতে বৃদ্ধিতে সন্তানের চাই সঠিক পুষ্টি
পুষ্টি ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুব জরুরি। কেননা জন্মের পর প্রথ এই কয়েক