দেহের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে শরীরে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের প্রয়োজন। এই খনিজ পদার্থের মধ্যে একটি অপরিহার্য উপাদান হলো জিংক , যা খাবারে খুবই অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়। যদিও এই জিংক খুব বেশি পরিমাণে প্রয়োজন হয় না, তারপরও এর ঘাটতি দেখা দিলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কেন দরকার জিংক ?
শিশুদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই খাদ্যোপাদান শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, কোষ বিভাজনে, স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি ঠিক রাখতে, শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে, শরীরের ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকাতে, জিংক প্রয়োজন
জিংক -এর অভাবে কী হয় জানেন?
অল্প পরিমাণ জিংক -এর অভাবে শিশুদের শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশ হ্রাস পায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায় খাবারে অরুচি দেখা দেয় স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পায় দৃষ্টিশক্তি কমে যায় ক্ষত শুকাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে। বেশি পরিমাণ ঘাটতিতে যেসব সমস্যা হয়ঃ চুল ঝরে পরা, ডায়রিয়া না নখ ভেঙে যায়, বার বার ইনফেকশন হয় ইত্যাদি।
যেসব কারণে জিংকের ঘাটতি হয়ঃ
১।খাদ্যের মাধ্যমে কম গ্রহণ করা
২।বার বার ডায়রিয়া হওয়া
৩।যদি IBS থাকে
৪।পাকস্থলীর কোন অসুখ থাকলে।
জিংক শোষণকে যা বাধাগ্রস্ত করেঃ
১। জিংক সাপ্লিমেন্ট এর সাথে আয়রন,কপার এবং ফসফরাস খেলে জিংক শোষণ বাধাগ্রস্ত হয়।
২। ভিটামিন এ-এর অভাবে জিংক এবং জিংকের অভাবে ভিটামিনে এ- এর ঘাটতি হয়।
শিশুদের প্রতিদিন কতটুকু জিংক গ্রহণ করা দরকার?
জিংক শরীরে উৎপন্ন হয় না, তাই একে খাবারের মাধ্যমেই গ্রহণ করতে হয়। বয়সভেদে শরীরে জিংক গ্রহণের পরিমাণ ভিন্ন হয়। নীচে বয়সভেদে শিশুদের দৈনিক জিংক গ্রহণের পরিমাণ দেওয়া হলোঃ
৭ মাস থেকে ৩ বছরের শিশুর জন্য দৈনিক ৩ মি.গ্রা,
৪ থেকে ৮ বছরের শিশুর জন্য দৈনিক ৫ মি.গ্রা
৯ থেকে ১৩ বছরের শিশুর জন্য দৈনিক ৮ মি.গ্রা জিংক প্রয়োজন
কী কী খাবারে জিংক পাবেন?
লাল মাংস, লাল চাল,লাল আটা, মুরগীর মাংস, শস্যদানা সিরিয়াল, শিম ও বাদাম কুমড়োর বীজ, দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার, পনির ইত্যাদি। জেনে রাখা ভাল, প্রাণীজ উৎস উদ্ভিত জাতীয় উৎস থেকে ভাল।
শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে দৈনিক তার খাদ্যতালিকায় জিংক সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। নিশ্চিত করুন তার হেলদি ভবিষ্যৎ।