স্টুডেন্ট লাইফ মানেই প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। শিক্ষা জীবনে স্টুডেন্টদের পরীক্ষার মাধ্যমেই ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শুরু করতে হয় ছাত্রজীবনের পরবর্তী অধ্যায়। আর পরীক্ষা মানেই এক্সট্রা পড়ার চাপ, তাই না? পরীক্ষার সময় একসাথে অনেক পড়া রিভিশন দিয়ে, তারপর তৈরি করতে হয় জোর প্রস্তুতি। অনেক সময় নিয়ে পড়ার জন্য মনোযোগ ধরে রাখাটাই সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। চলুন তবে আমাদের বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের কাছ থেকে জেনে নেই, পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাওয়া উচিত!
পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন যেসকল পুষ্টিকর উপাদান
পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত পড়ার চাপ নিতে সবার আগে ছাত্রছাত্রীদের সুস্থ থাকা প্রয়োজন। পরীক্ষা বা এক্সামের সময় বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই পড়ার চাপে প্রায়ই খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম করে। তাই শারিরীক ও মানসিকভাবে এক ধরনের দুর্বলতা কাজ করে। তাছাড়া, খাবারে অনিয়ম করায় এসময় ইমিউন সিস্টেম কম কাজ করে। অনেক সময় এক্সাম হলে কিংবা তার আগে নার্ভাস থাকার কারণে জোরালো প্রস্তুতি নিয়েও অনেকের পরীক্ষা খারাপ হয়ে যায়।
আয়োডিন মনোযোগ বাড়াতে ও ধরে রাখতে সহায়ক একটি উপাদান। আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে বাচ্চাদের দিতে পারেন ডিম,দুধ, চিংড়ি, কলা, টকদই প্রভৃতি। এছাড়াও মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে ও এর কর্মক্ষমতায় জিংক বিশেষভাবে সহায়তা করে। ইমিউন সিস্টেম তথা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন-সি অত্যন্ত কার্যকরী। এসময় তাই খাবারের সাথে লেবু দিতে পারেন। নাস্তায় রাখতে পারেন টক জাতীয় ফল- মাল্টা কিংবা কমলা। এছাড়া লেবু বা মাল্টার জুসও করে দিতে পারেন।
দেহকে সুস্থ-সবল ও কর্মচঞ্চল রাখার জন্য সবার আগে প্রয়োজন কার্বোহাইড্রেট। পরীক্ষার সময় এক্সট্রা এনার্জি পেতে তাই নিশ্চিত করতে হবে কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেট এর চাহিদাপূরণ করতে বাচ্চাদের ভাত ও রুটির পাশাপাশি মিষ্টি জাতীয় কিছু খাবার দিতে পারেন, যা ব্রেইনে পরীক্ষার সময় পর্যাপ্ত গ্লুকোজ সরবারহ করতে পারবে যেমন-খেজুর, কিসমিস, মোরব্বা ইত্যাদি। এছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রণ ও বিভিন্ন ভিটামিন ইত্যাদি উপাদান দেহের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পরিমাণ মতো খাওয়া প্রয়োজন।
মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য ও নার্ভাস সিস্টেমকে সচল রাখার জন্য ফ্যাটি এসিড ও কোলিন সমৃদ্ধ খাবার– যেমন তৈলাক্ত মাছ, সামুদ্রিক মাছ, কাঠ বাদাম, আখরোট, ডিম, কলিজা, মিষ্টি কুমড়ার বিচি, তিলের বীজ, তিশির দানা ব্যবহার করে বাচ্চাদের জন্য মজাদার রেসিপি তৈরি করা যেতে পারে।
যেহেতু পরীক্ষার চাপে অনেক স্টুডেন্ট ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করে না, সেহেতু ব্রেইনকে কার্যকর রাখতে ও ফিটনেস ধরে রাখতে এসময় বাচ্চাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট সহজে নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য বিভিন্ন মিষ্টি ফলের জুস ও নাস্তা হিসেবে গাজরের হালুয়া, সুজির হালুয়া, ডিমের হালুয়া ইত্যাদি মুখোরোচক খাবার রাখতে পারেন। এসকল খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণ হবার পাশাপাশি দেহের জন্য পুষ্টিকর অন্যান্য উপাদানও পূরণ হবে।
অনেক স্টুডেন্টদেরই এখন পরীক্ষা চলমান, কারও বা আবার পরীক্ষা আসন্ন। আপনার সন্তানের সুস্থতায় ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতায় পরীক্ষার সময় তাই চাই একটু এক্সট্রা কেয়ার। এক্সাম নিয়ে তাই, নো টেনশন। আপনার সন্তানের জানা ও শেখার পরিধি বৃদ্ধি পাক ভীতিহীনভাবে।