কী এই ফলিক এসিড?
ফলিক এসিড হলো এক ধরনের ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। একে ভিটামিন ই-৯ বলা হয়। এটি পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, আর তাই ফলিক এসিড চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের মতো শরীরে মজুদ থাকে না। তাই, খাবারের মাধ্যমে দেহে ফলিক এসিড-এর যোগান দিতে হয়।
কেন গর্ভবতী মায়েদেরই ফলিক এসিড বেশি প্রয়োজন?
গর্ভাবস্থায় মায়ের সঠিক পুষ্টিই নিশ্চিত করে নবজাতকের সুস্বাস্থ্য। তাই, গর্ভাবস্থায় মায়ের সুস্বাস্থ্যের দিকে আলাদাভাবে নজর দিতে হয়। ফলিক এসিড গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ু রজ্জু গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই গর্ভস্থ সন্তান ও গর্ভবতী মায়ের জন্য ফলিক এসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কী কী সমস্যা হয় ফলিক এসিড-এর অভাবে?
মায়ের দেহে ফলিক এসিড-এর অভাব, মা ও শিশু দুজনের জন্যই বেশ ঝুঁকিপুর্ণ। মূলত ের অভাবে যে সমস্যাগুলো হয় তা হলো-
*মায়ের দেহে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাচ্চার স্বাস্থ্য।
*মর্নিং সিকনেস, অর্থাৎ সকাল বেলা গা-গুলানো ভাব হয়, খারাপ লাগে কিংবা বমি হয়।
*বাচ্চা প্রি-ম্যাচিওর অবস্থায় জন্ম নেয়, যা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ!
*ভূমিষ্ঠ বাচ্চার ওজন অনেকসময় অস্বাভাবিক কম হয়।
*বাচ্চার নিউরাল টিউব-এ সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাৎ জন্মগতভাবেই বাচ্চার মস্তিষ্কে ও মেরুদণ্ডে জটিলতা ধরা পড়ে।
কোন কোন খাবারে পাবেন এই ফলিক এসিড?
যকৃত, পালং শাক, অ্যাসপারাগাস, বরবটি, সাদা চাল, লেটুস, শাক, অ্যাভোকাডো, ব্রকলি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড পাওয়া যায়।
শেষ করার আগে ছোট করে একটু বলে নিতে চাই, অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা নিয়ে। আমাদের দেশে একটি অন্যতম গর্ভকালীন সমস্যা হলো অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা।
সাধারণত ৩ ধরনের রক্তস্বল্পতা দেখা যায়-
১) আয়রন ডিফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া
২) ফলেট ডিফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া
৩) ভিটামিন বি১২ অ্যানিমিয়া
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তস্বল্পতার ধরন বুঝে, এসময় প্রয়োজনমতো আয়রন, ফলিক এসিড, ও ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা খুবই জরুরী। তবে, দেহ ফলিক এসিড, আয়রন ইত্যাদি গ্রহণ করার পর রক্ত তৈরি করতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফলিক এসিড কিংবা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে।