গর্ভাবস্থায় অ্যাসিডিটি একটি সাধারণ সমস্যা। সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। গর্ভধারণের প্রথমদিকে শরীর বেশি করে প্রোজেস্টেরন ও রিলাক্সিন হরমোন নিঃসরণ করে। এই দুটি হরমোন শরীরের বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টকে শিথিল করে দেয়। এতে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের মুভমেন্ট ধীর হয়ে যায় এবং খাবার হজম হতে সময় লাগে বেশি। তখনই শরীর ভার লাগে, গ্যাস্ট্রিকের ভাব হয় কিংবা বুক জ্বালাপোড়া হয়। চলুন জেনে নিই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার ৮টি টিপস্।
১) এসিডিটি হয় এমন খাবার, যেমন- অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার, ভাজা-পোড়া, ফাস্টফুড, প্রসেস করা মাংস, ড্রাই ফুড, ফ্যাটি ফুড, ইস্ট দিয়ে তৈরি খাবার, ক্যাফেইন, দুধ চা- ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
২) পানি ও খাবার একসাথে খাবেন না। খাবারের মাঝে পানি খেলে পানি বেশি খাওয়া হয় এবং এতে পাকস্থলীকে ভরে যায়, পেট টাইট-টাইট লাগে/ অস্বস্তি লাগে। পানি খাবেন খাবার গ্রহণের ১-২ ঘণ্টা আগে অথবা পরে।
৩) ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে খাবার গ্রহণ করুন। খাবার গ্রহণ করে সাথে সাথেই শুয়ে পড়বেন না। একটু সময় নিন, হালকা হাঁটাহাঁটি করুন।
৪) ৩ বেলা ভরপেট না খেয়ে, সেই খাবারটাকে ছোট ছোট মিল-এ ভাগ করে নিয়ে ৬ বেলা খান।
৫) ধীরেসুস্থে, সময় নিয়ে খাবারটা ভালো করে চিবিয়ে খাবেন। এতে হজমতন্ত্রে চাপ কম পড়বে এবং খাবার ভালো হজম হবে।
৬) অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকলে এই সমস্যা বেড়ে যায়। তাই পেট খালি রাখা যাবে না। সাধারণত, এই এসিড রিফ্লাক্স-এর কারণেই সকালবেলার অস্বস্তিভাবটা ঘনঘন হয়। সেক্ষেত্রে, ভোরবেলা শুকনা খাবার যেমন- ড্রাই বিস্কুট বা খেজুর খেয়ে পানি খেয়ে নিতে পারেন।
৭) প্রতিবেলায় অথবা চাইলে শুধুমাত্র দুপুর ও রাতে খাবারের পর আধা বাটি দই খেলে হজমের সমস্যা কম হবে।
৮) দুই খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে বা যে সময় বমি বমি ভাব হয়, তখন আ’মন্ড (Almond) বাদাম খাওয়া যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় যেন ওজন বেশি বেড়ে না যায়, সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। দেহের বাহ্যিক আরামের জন্য হালকা হাঁটাচলা করলে ও ঢোলা জামা-কাপড় পরলে একটু রিল্যাক্স লাগবে।
তো নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন? মূলত খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা কমানো সম্ভব। টিপস গুলো ফলো করে উপকার পেলে আমাদের ফেসবুক পেইজ-এ কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।