গর্ভবতীর ক্ষুধা-মন্দায় রুচি আনার সহজ ৮টি উপায়

আপনি কি একজন গর্ভবতী মা? আপনার কি পরবর্তী খাবারের কথা চিন্তা করতেই পেটে ব্যথা শুরু হয়ে যায়? তাহলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনি একা নন। বাচ্চা কনসিভ করার পর মায়ের শরীরে হরমোন অনেক বেশি উঠানামা করে। এর ফলে প্রায়ই বমিবমি ভাবসহ দিনে অন্তত একবার বমি হয়। একারণে মায়েদের আর খেতে ইচ্ছে করে না। রিসার্চ বলে প্রেগন্যান্সিতে বিভিন্ন হরমোনের উঠানামা বিশেষ করে লেবটিন (Lebtin) ও হিউম্যান কোরিওনিক গোনাটোটোপিন (HCG) এর প্রভাবে রুচি কমে যায় এবং বমি বমি ভাব বা বমি হয়। তবে চিন্তার কিছু নেই। এখানে আমরা আপনার জন্য এমন কিছু কার্যকরী উপায় উল্লেখ করছি, যা আপনার ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করবে।


যা খাই ৩ বেলায়, ভাগ করে নিই ৬ বেলায়

ক্ষুধাভাব কমে গেলে তিনবেলার ভারী খাবার দুঃস্বপ্নের মতো লাগে। কিন্তু কনসিভ-এর পর আপনাকে খেতে হচ্ছে আপনার ও বাচ্চার-দু’জনেরই খাবার। সেক্ষেত্রে তিন বেলার ভারী খাবারকে ছয় বেলার ভাগ করে খাওয়া যেতে পারে। তখন আপনার প্রতিবার খাবার পরে আর পেট ভারী লাগবে না, পাশাপাশি আপনি পেয়ে যাবেন শরীরের প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্টও।

উচ্চ ক্যালরী এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

যেহেতু এসময় বেশি খাওয়া যায় না, তাই অনেকে একদমই খেতে পারেন না। সেক্ষেত্রে উচ্চ ক্যালরীযুক্ত খাবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন, পিনাট বাটার, ডিম, মাংস, স্টেক, মাছ ইত্যাদি ও উচ্চ ক্যালরী সমৃদ্ধ খাবার যেমন, চিজ, দই, দুধ, স্মুদি ইত্যাদি।


খাই স্বাস্থ্যকর কিন্তু হালকা নাস্তা

নাস্তা সাধারণত আপনার ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। তাই আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাবার সারাদিন ধরে খান, তাহলে আপনার পেট যেমন হালকা থাকবে, ক্ষুধাও বাড়বে। অ্যালমনড বা বাদাম আপনার মর্নিং সিকনেস বা সকালের অসুস্থতা ও বমিবমি ভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি এতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই হাতের কাছে সবসময় অ্যালমনড রাখা উচিত।

ক্যালরী সমৃদ্ধ পানীয়

যেহেতু এসময় সলিড ফুড খাওয়া সমস্যা হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ক্যালরী সমৃদ্ধ পানীয় খাওয়া যেতে পারে। যেমন, মিল্ক শেক, বিভিন্ন ফলের রস, দুধ+কলা+বাদাম এর স্মুদি অথবা দুধ+কিসমিস+আপেল এর স্মুদি ইত্যাদি। এবং অবশ্যই প্রতিদিন লেবুর সরবত পান করুন।

নিজে খাবার নির্বাচন করুন

রিসার্চ বলে, যদি গর্ভবতী মা নিজে ঠিক করেন, তিনি কি খাবেন এবং এটা নিয়ে প্লান করেন, তবে তার খাবার রুচি তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়। এজন্য নিজের খাবার নিজে ঠিক করুন এবং ডায়েট প্ল্যান করুন। যদি আপনার পছন্দের খাবার অস্বাস্থ্যকর হয় যেমন ফাস্ট ফুড, তবে আপনি বাসায় নিজে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ফাস্ট ফুড  তৈরী করুন। যেমন, অলিভ তেল ব্যবহার করা, মেয়নিজ এর বদলে দই ব্যবহার করা করা, হোলসাম খাবার খাওয়া করা ইত্যাদি ।

অতিরিক্ত ফাইবার এড়িয়ে চলুন

যেসব খাবার খেলে অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগে না যেমন, অতিরিক্ত ফাইবারযুক্ত খাবার (অতিরিক্ত শাক-সবজী, ভাত ইত্যাদি) কম খেয়ে কম ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে পারেন।


শরীরচর্চা

প্রেগন্যান্সির সময় অ্যাকটিভ থাকা খুবই জরুরী। কেননা এটি আপনাকে লেবার ও ডেলিভারির জন্য শারীরিকভাবে প্রস্তুত করে। পাশাপাশি এটি আপনার শরীরের ক্যালরি বার্ন করে আপনার মধ্যে ক্ষুধা-ভাব জাগায়। তাই যদি ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, পর্যাপ্ত শরীরচর্চা করুন। তবে শরীরচর্চা করবার সময় কোন ব্যায়ামগুলো করবেন, কোন গুলো করবেন না- তা নিয়ে আগে পরামর্শ করুন ডাক্তারের সাথে।


ডায়েটে থাকুক আদা

পৃথিবীর সব গর্ভবতী মায়েদের কাছে পেট ঠিক রাখা ও ক্ষুধা বাড়ানোর জন্য আদা অন্যতম জনপ্রিয় একটি খাবার। আদা চিবিয়ে খেলে কিংবা চায়ের সাথে মিশিয়ে খেলে বমিভাব দূর হয়। তাই প্রত্যেক গর্ভবতী মায়েদের মাসিক বাজারের লিস্টে আদা রাখা উচিত।

facebook.com linkedin.com twitter.com
Categories:

Leave a Reply

শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রয়োজন যে ৮টি খাবার
প্রতিটি পরিবারে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে থাকে বাড়তি সচেতনতা। বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে, বাচ্চার বয়স
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে কোন ৫টি সমস্যা দেখা দেয়?
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে যে ৫টি সমস্যা দেখা দেয় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আয়োডিনের ঘাটতির
পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার
স্টুডেন্ট লাইফ মানেই প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। শিক্ষা জীবনে স্টুডেন্টদের পরীক্ষার মাধ্যমেই ধাপে ধাপে এগিয়ে
দৈহিক সুস্থতায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংক কেন প্রয়োজন?
সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানে পরিপূর্ণ থাকা চাই। সহজভাবে বলতে চাইলে,
don't worry about summer
প্রচন্ড গরমে নিমিষেই দূর হবে সারাদিনের ক্লান্তি
রোদের তাপ ক্রমশ বাড়ছে তাই না? এদিকে এই গরমের দিনে মিসেস শারমিনকে থাকতে হয় সারাদিন
গরমে সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাওয়া চাই?
ইদানীং অনেক গরম পড়েছে তাই না? চারিদিকে গরমের দাবদাহে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। কিন্তু জীবন-জীবীকার খোঁজে আমাদের
কম খরচে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে খাদ্যতালিকা যেমন হওয়া উচিত
বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন? মাছ-মাংসের দাম শুনলেই মনে হয় বাজারে আগুন লেগে আছে। কিন্তু
DHA এবং ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট
ডোকোসাহেক্সনিক এসিড বা সংক্ষেপে DHA হলো মস্তিষ্ক গঠনের একদম প্রাথমিক উপাদান। সহজ করে বললে DHA
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন কেন জরুরি ?
গর্ভকালীন সময়ে গর্ভস্থ সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিতে মায়ের চাই বাড়তি যত্ন ও সব রকমের পুষ্টি
বুদ্ধিতে বৃদ্ধিতে সন্তানের চাই সঠিক পুষ্টি
পুষ্টি ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুব জরুরি। কেননা জন্মের পর প্রথ এই কয়েক