বাচ্চার প্রথম দুই বছরের খাদ্য ব্যবস্থাপনা বাচ্চার শারীরিক বৃদ্ধির জন্য জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় যদি সঠিক খাদ্য গ্রহণ করা না হয়, ভিটামিন বা মিনারেলসের অভাব হয় তবে বাচ্চার বৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এইজন্য বাচ্চার এই বয়সে সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সঠিক পুষ্টির অভাব হলে যে সমস্ত সমস্যা দেখা দেয়ঃ
১।বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা কমে যাওয়া
২।আয়রনের অভাব জনিত অ্যানিমিয়া
৩।ভিটামিন এ-র ঘাটতি
৪।ঘন ঘন ডায়রিয়া
৫।ঘন ঘন ঠান্ডা জনিত অসুখ ও অন্যান্য অসুখ হওয়া
৬।বাচ্চার IQ কম হওয়ার ফলে স্কুল পারফরম্যান্স খারাপ হয়।
খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
১।এই সময়ে বাচ্চার শারীরিক বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয় বলে বাচ্চার ক্যালরি চাহিদা বেশি থাকে।এ বয়সি বাচ্চার ক্যালরি চাহিদা ১২০০ কিলো ক্যালরি।
২।এসময় বাচ্চার কার্বোহাইড্রেট এর চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্য তালিকায় প্রতি বেলায় ১/২টি রুটি বা ১ .১/২ কাপ ভাত থাকতে হবে।
৩।দুই বছরের বাচ্চার muscle ডেভলপমেন্ট বেশি এবং শারিরীকভাবে লম্বা হয় বলে এসময় প্রোটিনের চাহিদা বেশি থাকে। প্রতি দিন প্রায় ৩৪ থেকে ৪০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন দেওয়া যেতে পারে। প্রোটিন হিসেবে ডিম, মাছ মাংস, বিভিন্ন রকমের ডাল এবং বাদাম দেয়া যায়।
৪।এ সময় বাচ্চার ভিটামিন ও মিনারেল এর চাহিদা অনেক বেশি থাকে। এজন্য প্রতি দিন অন্তত একটি শাক এবং লাল বা হলুদ রঙের সব্জি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। প্রতিদিন ১/২ কাপ শাক এবং ১/২ কাপ সবজি দিতে হবে।
৫।এসময় সাধারণত বেশি আয়রনের অভাব জনিত এনিমিয়া দেখা যায়।তাই প্রতি দিন একটি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ কাচা কলা বা পাকা কলা ,শিং মাছ,কলিজা,লাল শাক,বেদানা ইত্যাদি খাবার দেয়া যেতে পারে।
৬।এ বয়সে ভিটামিন এ-র অভাব দেখা যায়। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় গাজর, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, ডিম, দুধ জাতীয় খাবার, পালং শাক, পনির, সবুজ শাক ইত্যাদি ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করতে হবে।
৭।প্রতিদিন অন্তত এক কাপ দুধ দিতে হবে যা বাচ্চার ক্যালসিয়াম, ভিটামিন -এ ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে।
৮।প্রতিদিন এক গ্লাস লেবুর শরবত এবং একটি ভিটামিন সি জাতীয় ফল খাওয়াতে হবে। যেমনঃপেয়ারা আমড়া জাম্বুরা, কমলা বা মালটা।
৯।প্রতিদিন এ বয়সী বাচ্চাদের কমপক্ষে এক লিটার পানি খাওয়াতে হবে।
*বিঃদ্রঃ ২ বছর পর্যন্ত বাচ্চা অন্য খাবারের পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ খাবে।