আর হবে না বাচ্চাদের সবজি বা ফল না খাওয়ার বাহানা!


বাচ্চা মানেই যেন তাদের বাহানার কোন জুরি নেই। আর খাবারের বেলায় তো তাদের তালবাহানার কোন শেষই হতে  চায় না।

এটা খাবো না, ওটা খাবো না- বাচ্চাদের এই তালবাহানা শুনেন না, এমন বাবা-মা পাওয়া দুষ্কর। আর সবজি বা  ফলমূল দেখলে তো বাচ্চা ১০০ হাত দূরে থাকতে চায়। আসলে আজকাল এর বাচ্চারা ছোট্টবেলা থেকেই যেন বাহিরের ফাষ্টফুড জাতীয় খাবারের দিকে বেশি  ঝুকে যায়। আর এই জাতীয় খাবারের তেমন কোনো পুষ্টিগুন তো থাকেই না  অথচ শরীরের জন্য এই খাবার গুলো খুবই ক্ষতিকর। তাই ছোট বেলা থেকে দেহে এভাবেই প্রয়োজনীয় পুষ্টির   একটা  ঘাটতি রয়ে যায়।

কিন্তু একটি শিশুর সঠিক বিকাশের জন্য তাকে ছোটবেলা থেকেই   পুষ্টিকর খাবারের ব্যাপার এ অভ্যস্ত করানো উচিৎ। সাধারণত বাচ্চাদের সবচেয়ে  বেশি অনীহা দেখা যায়  শাক সবজি আর ফলমূলের ক্ষেত্রে। অথচ এই তাজা সব্জি আর ফলই হচ্ছে প্রকৃত ভিটামিন  আর মিনারেলস এর সঠিক  উৎস।

এমনও অনেক বাচ্চা আছে না, যারা খাবে ‘না’ মানে তো খাবেই না? কিন্তু চিন্তা নেই! আজ আমারা বাচ্চাদের কিভাবে সব্জি আর ফল খাওয়ানো যায় সেটারই  কিছু টিপস জানব, দেখবেন, সবজি-ফল না খাওয়ার বাহানা বাচ্চা আর কখনোই দিবে না।

বাচ্চার প্রিয় খাবারে সবজি মিশিয়ে দিন

প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে আপনার বাচ্চার সবচেয়ে পছন্দের খাবার কোনটা। সাধারণত বাচ্চাদের পছন্দের কিছু খাবার আছে যা তারা কখনোই না করে না, যদি  নুডলস, বা পাস্তা ইত্যাদি জাতীয় খাবার পছন্দ করে তাহলে এগুলোতে বেশী করে সবজি মিশিয়ে দিন; যেমন- গাজর, মটর, ফুলকপি ইত্যাদি। দেখবেন, টের তো পাবেই না, বরং খেয়ে বলবে- “আম্মু আবার দাও!” অনেক বাচ্চারা আবার কাবাব খেতে পছন্দ করে। তাদের কে মাংসের সাথে  বিভিন্ন  সব্জি দিয়ে কাকলেট বানিয়েও  দেয়া যেতে পারে।

ফল কিংবা সবজি কাটুন ইন্টারেস্টিং কোনও শেপ-

সবজি/ ফল তেমন পছন্দ না করার একটা কারণ হলো, তাদের কাছে এগুলো অনেক বোরিং লাগে। অথচ খেয়াল করে দেখেছেন কী না জানিনা, পাণ্ডা বা স্টার শেপের চিপস/ চকো ফ্লেক্স তারা আগ্রহ নিয়ে খেতে চায়। আশা করি বুঝেই গিয়েছেন? সবজি বা ফল কাটার সময় শেপ নিয়ে একটু মজা করুন। কাটুন স্টার, ডায়মন্ড-এর মতো মজার কোনও শেপে কিংবা প্লেটে সাজিয়ে দিন তার প্রিয় কার্টুন ক্যারেক্টার-এর শেপ-এ।

একই খাবার রান্না করুন ভিন্ন রেসিপিতে

মাঝে মাঝে তো আমরা বড়রাই একইরকম খাবারে বোর হই। বাচ্চাদের  বেলায় এই মুড সুইং তো আরও বেশি! তাই চেষ্টা করুন ভিন্ন ভিন্ন রেসিপি ফলো করার। অনেক সবজি আছে যেগুলো ভাজি, বারবিকিউ, ডিপ ফ্রাই, বড়া, রোস্ট এমনকি কারি করেও খাওয়া যায়। আবার ডেজার্ট-এও ট্রাই করতে পারেন ভিন্ন ভ্যারিয়েশন; যেমন  বিভিন্ন ফল দিয়ে বানিয়ে ফেলুন আপনার বাচ্চার পছন্দের ডেজার্ট আইটেম   আবার তাজা ফলের জুস করে  সাথে বাদাম বা  চকোলেট সিরাপ মিশিয়ে ও খাওয়াতে পারেন। খেয়াল করুন বাচ্চা কোনটা বেশি পছন্দ করছে।

বানাতে পারেন স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু ও কালারফুল সালাদ

শুধু সবজি দিয়ে সালাদ না বানিয়ে মাঝে মাঝে সামান্য চিকেন, চিংড়িমাছ কিংবা স্প্যাঘেতি মিশিয়ে বানাতে পারেন খুবই হেলদি এবং কালারফুল সালাদ ডিশ। এছাড়াও ফ্রুট সালাদ ট্রাই করতে পারেন বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে।

অভ্যাসটা হোক ছোটবেলা থেকেই

ছোটবেলা থেকেই  আপনার বাচ্চার  জন্য  একটি সুষম খাদ্যের তালিকা অনুসরণ করুন। ভাতের সঙ্গে শুধু  মাছ-মাংস বেশি বেশি না খেয়ে বরং পরিমান অনুযায়ী মাছ-মাংস, শাক-সব্জি, ডাল, সালাদ অর্থাৎ খাবারের অত্যাবশকীয় ৬ টি উপাদান যেন আপনার  বাচ্চার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকাতে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। এতে করে ছোটবেলা থেকেই বাচ্চা সুষম খাবারে অভ্যস্ত হবে; সব ধরনের খাবার খাবে।আর আপনার বাচ্চার সঠিক শারিরীক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদাটিয় পুরোন হয়ে যাবে।

শিখুক তার রোল মডেল-এর কাছে

সব শিশুরই কেউ না কেউ একজন থাকে যাকে সে পরিবারে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে কিংবা ফলো করে। যেমন হতে পারে তার বাবা,প্রিয় খালামনি, কিংবা নানু বা দাদাভাই । তার সামনে তার সেই রোল মডেল যখন দেখিয়ে দেখিয়ে শাক-সবজি- ফল খাবে, সে কিছুটা হলেও খেতে চাইবে।

তো আশা করি এই টিপস গুলো প্রয়োগ করলে বাচ্চার ডায়েটে সহজেই সবজি বা ফল অ্যাড করা যাবে। এভাবেই গড়ে উঠুক আপনার বাচ্চার একটা হেলদি ফুড হ্যাবিট।

facebook.com linkedin.com twitter.com
Categories:

Leave a Reply

শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রয়োজন যে ৮টি খাবার
প্রতিটি পরিবারে বাচ্চাদের খাবার নিয়ে থাকে বাড়তি সচেতনতা। বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে, বাচ্চার বয়স
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে কোন ৫টি সমস্যা দেখা দেয়?
শিশুর আয়োডিনের ঘাটতি হলে যে ৫টি সমস্যা দেখা দেয় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আয়োডিনের ঘাটতির
পরীক্ষার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার
স্টুডেন্ট লাইফ মানেই প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। শিক্ষা জীবনে স্টুডেন্টদের পরীক্ষার মাধ্যমেই ধাপে ধাপে এগিয়ে
দৈহিক সুস্থতায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংক কেন প্রয়োজন?
সুস্থ থাকতে হলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানে পরিপূর্ণ থাকা চাই। সহজভাবে বলতে চাইলে,
don't worry about summer
প্রচন্ড গরমে নিমিষেই দূর হবে সারাদিনের ক্লান্তি
রোদের তাপ ক্রমশ বাড়ছে তাই না? এদিকে এই গরমের দিনে মিসেস শারমিনকে থাকতে হয় সারাদিন
গরমে সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাওয়া চাই?
ইদানীং অনেক গরম পড়েছে তাই না? চারিদিকে গরমের দাবদাহে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। কিন্তু জীবন-জীবীকার খোঁজে আমাদের
কম খরচে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে খাদ্যতালিকা যেমন হওয়া উচিত
বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন? মাছ-মাংসের দাম শুনলেই মনে হয় বাজারে আগুন লেগে আছে। কিন্তু
DHA এবং ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট
ডোকোসাহেক্সনিক এসিড বা সংক্ষেপে DHA হলো মস্তিষ্ক গঠনের একদম প্রাথমিক উপাদান। সহজ করে বললে DHA
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন কেন জরুরি ?
গর্ভকালীন সময়ে গর্ভস্থ সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিতে মায়ের চাই বাড়তি যত্ন ও সব রকমের পুষ্টি
বুদ্ধিতে বৃদ্ধিতে সন্তানের চাই সঠিক পুষ্টি
পুষ্টি ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বাড়ন্ত শিশুর জন্য খুব জরুরি। কেননা জন্মের পর প্রথ এই কয়েক